ভৌত রাশি এবং তাদের পরিমাপ – (পদার্থ বিজ্ঞান, ৯ম-১০ম) | নোট ২

পরিমাপের ক্ষেত্রে স্লাইড ক্যালিপার্স অপেক্ষা স্কুগজ অধিক সূক্ষ্ম কেন?

সাধারণ স্লাইড ক্যালিপার্সের ভার্নিয়ার ধ্রুবক, $ VC = \frac {1}{10}mm $ $$=0.1mm$$ $$=0.01cm$$ অপরদিকে সাধারণ স্ক্রুগজের ন্যূনাঙ্ক, $ LC = \frac{1}{100} mm$ $$ = 0.01 mm$$ $$ = 0.001 cm $$ সুতরাং, যেখানে স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে সর্বনিম্ন 0.01 cm এর দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায় সেখানে স্ক্রুগজের সাহায্যে সর্বনিম্ন 0.001 cm এর দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা সম্ভব। অর্থাৎ স্ক্রুগজ স্লাইড ক্যালিপার্সের তুলনায় $\frac{0.01}{0.001} =10$ ভাগ ছোট জিনিসের অথবা সেন্টিমিটার স্কেলে দশমিকের পর তিনঘর পর্যন্ত নির্ভুল পরিমাপ করতে সক্ষম।

একারণে পরিমাপের ক্ষেত্রে স্লাইড ক্যালিপার্স অপেক্ষা স্কুগজ অধিক সূক্ষ্ম।

কোনো রাশির মাত্রা জানার প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা কর।

একটি রাশিতে বিভিন্ন মৌলিক রাশি কোন সূচকে বা কোন পাওয়ারে আছে, তাকে তার মাত্রা বলে। কোনো ভৌত রাশি এক বা একাধিক মৌলিক রাশির সমন্বয়ে গঠিত। সুতরাং যেকোনো ভৌত রাশিকে বিভিন্ন সূচকের এক বা একাধিক মৌলিক রাশির গুণফল হিসেবে প্রকাশ করা যায়। যেমন,$$ বল = ভর\times \text{ত্বরণ} $$ $$ = ভর \times \frac {\text{বেগ}}{\text{সময়}}$$ $$ =ভর\times \frac{\text{দৈর্ঘ্য}}{\text{সময়}^2} $$ এখানে দৈর্ঘ্যের মাত্রা L, ভরের মাত্রা M, সময়ের মাত্রা T বসালে বলের মাত্রা পাওয়া যাবে $\frac{ML}{T^2}$ বা MLT-2 অর্থাৎ বলের রয়েছে ভরের মাত্রা-সূচক 1, দৈর্ঘ্যের মাত্রা-সূচক 1, এবং সময়ের মাত্রা-সূচক -2 । এভাবে, কোনো রাশির মাত্রা জানা থাকলে রাশিটি কোন কোন মৌলিক রাশি দ্বারা গঠিত এবং তাদের পারস্পরিক সূচকীয় সম্পর্ক খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়, বিধায় একটি ভৌত রাশির মাত্রা জানা প্রয়োজন।

মাত্রা সমীকরণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।

কোন ভৌত রাশিতে উপস্থিত মৌলিক রাশিগুলোর সূচককে রাশিটির মাত্রা বলে। যেমন- বলের মাত্রা [F] = MLT-2 । যেকোনো ভৌত রাশির মাত্রা সমীকরণ জানা থাকলে-

  • ভৌত রাশিটি কোন কোন মৌলিক রাশি দ্বারা গঠিত তা জানা যায়
  • রাশির একক নির্ণয় করা যায়।
  • সমীকরণের সঠিকতা যাচাই করা যায়।
  • এক পদ্ধতির এককের সাথে অন্য পদ্ধতির এককের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যায়।

মন্দন লব্ধ রাশি কেন?

সময়ের সাথে বস্তুর বেগ হাসের হার হলো মন্দন। অর্থাৎ $$ \text {মন্দন} = \frac {\text {বেগের হ্রাস}}{\text{সময় }} $$ $$ = \frac {\frac {\text {সরণ}}{\text {সময়}}}{\text {সময় }}$$ $$ = \frac {\text {সরণ}}{\text {সময়}^2} $$ এখানে, সরণ (দৈর্ঘ্য) ও সময় উভয়ই মৌলিক রাশি যার উপর মন্দন নির্ভরশীল। তাই মন্দন একটি লব্ধ রাশি।

ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম পরিমাপের ক্ষেত্রে মিটার স্কেলের সীমাবদ্ধতা কী? ব্যাখ্যা কর।

ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম পরিমাপের ক্ষেত্রে মিটার স্কেলের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। একটি স্কেলে সবচেয়ে যে সূক্ষ্ম দাগ থাকে, সে দাগ পর্যন্ত পরিমাপ করা যায়। মিটার স্কেল সাধারণত মিলিমিটার পর্যন্ত ভাগ করা থাকে। তাই মিটার স্কেল ব্যবহার করে কোনো কিছুর দৈর্ঘ্য মিলিমিটার পর্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করা রায়। মিলিমিটার পর্যন্ত দাগ থাকায় মিলিমিটার এর চেয়ে ছোট ও সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য মিটার স্কেলের সাহায্যে পরিমাপ করা যায় না।

কোনো বস্তুর সূক্ষ পরিমাপে মিটার স্কেলের চেয়ে স্লাইড ক্যালিপার্স অধিকতর উপযোগী কেন?

মিটার স্কেলে ক্ষুদ্রতম দৈর্ঘ্য সাধারণত মিলিমিটার পর্যন্ত ভাগ করা থাকে। তাই মিটার স্কেল ব্যবহার করে কোনো কিছুর দৈর্ঘ্য মিলিমিটার পর্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায়। অপরদিকে স্লাইড ক্যালিপার্সের ক্ষেত্রে মিলিমিটার থেকেও সূক্ষ্ম পারমাপ করা সম্ভব। সাধারণ স্লাইড ক্যালিপার্সের ভার্নিয়ার ধ্রুবক 0.1mm। অর্থাৎ এর সাহায্যে মিলিমিটারের থেকে দশ ভাগ ছোট ঘরের পরিমাপ করা সম্ভব। সুতরাং মিলিমিটার স্কেলে দশমিকের পর আরও এক ঘরের পরিমাপ সূক্ষ্মভাবে নির্ণয় করা সম্ভব বলে পরিমাণের ক্ষেত্রে মিটার স্কেলের চেয়ে স্লাইড ক্যালিপার্স অধিকতর উপযোগী।

স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে ভার্নিয়ার ধ্রুবক নির্ণয়ের সূত্রাট ব্যাখ্যা কর।

স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে ভার্নিয়ার ধ্রুবক নির্ণয়ে প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম কত ভাগ ভানিয়ার স্কেলের কত ভাগের সমান তা দেখতে হয়। তারপর প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম এক ভাগের দৈর্ঘ্য থেকে ভার্নিয়ার স্কেলের এক ভাগের দৈর্ঘ্য বিয়োগ করতে হয়। অর্থাৎ, ভার্নিয়ার ধ্রুবক = প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ভাগ – ভার্নিয়ার স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ভাগ। অন্যভাবেও ভার্নিয়ার ধ্রুবক সহজে নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে সূত্র হলো:

ভার্নিয়ার ধ্রুবক, $ VC = \frac {S}{n} $

এখানে, S= প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ভাগ (সাধারণত 1mm) n = ভার্নিয়ার স্কেলের ভাগের সংখ্যা।

স্ক্রুগজের ন্যূনাঙ্ক 0.01 mm বলতে কী বুঝায়?

স্ক্রুগজের ন্যূনাঙ্ক 0.01 mm বলতে বুঝায় স্ক্রুগজটি দ্বারা সর্বনিম্ন 0.01 mm পর্যন্ত নির্ভুলভাবে মাপা যাবে। স্ক্রুগজের পিচ 1mm ও বৃত্তাকার স্কেলের ভাগসংখ্যা 100 হলে, ন্যূনাঙ্ক $ =\frac {1}{100} $mm = 0.01 mm

অর্থাৎ, বৃত্তাকার স্কেল 1 ঘর ঘুরালে রৈখিক স্কেল 0.01mm অগ্রসর হবে

মিটার স্কেলের সাহায্যে বস্তুর সঠিক দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায় না কেন?

একটি স্কেলে সবচেয়ে যে সূক্ষ্ম দাগ থাকে, সে দাগ পর্যন্ত পরিমাপ করা যায়। মিটার স্কেল সাধারণত মিলিমিটার পর্যন্ত ভাগ করে থাকে। তাই মিটার স্কেল ব্যবহার করে কোনো কিছুর দৈর্ঘ্য মিলিমিটার পর্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করা যায়। মিটার স্কেল ব্যবহার করে মিলিমিটারের চেয়ে দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যায় না।

সুতরাং মিটার স্কেলে মিলিমিটার পর্যন্ত দাগ থাকায় মিলিমিটার এর চেয়ে সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য মিটার স্কেলের সাহায্যে পরিমাপ করা যায় না।

ভিন্ন ভিন্ন দৈর্ঘ্যের পরিমাপে একই চূড়ান্ত ত্রুটি হলে যেটির দৈর্ঘ্য বেশি সেটির পরিমাপের সঠিকতা বেশি- ব্যাখ্যা করো।

যে বস্তু পরিমাপে আপেক্ষিক ত্রুটি কম, সেটি পরিমাপের সঠিকতা বেশি। আমরা জানি, আপেক্ষিক ত্রুটি = $ \frac{\text {চূড়ান্ত ত্রুটি}}{\text {পরিমাপ করা মান}} \times {100} $ %

বস্তুর দৈর্ঘ্য বেশি হলে পরিমাপ করা মান বেশি হবে। তখন চূড়ান্ত ত্রুটি একই থাকলেও উক্ত সূত্রমতে আপেক্ষিক ত্রুটি কম হবে। তাই বস্তুটির দৈর্ঘ্য পরিমাপে সঠিকতা বেশি হবে।

স্লাইড ক্যালিপার্সে ভার্নিয়ার স্কেল কেন ব্যবহার করা হয়?

অধিকতর সঠিক পরিমাপের জন্য অর্থাৎ মিলিমিটারের ভগ্নাংশ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য সঠিকভাবে পরিমাপের জন্য স্লাইড ক্যালিপার্সে ভার্নিয়ার স্কেল ব্যবহার করা হয়। স্লাইড ক্যালিপার্সে দু’ধরনের স্কেল ব্যবহার করা হয়: যথা: মিটার স্কেল ও ভার্নিয়ার স্কেল। মিটার স্কেলে মিলিমিটার পর্যন্ত সঠিকভাবে মাপা যায়; এর ভগ্নাংশ সঠিকভাবে মাপতে হলে এর সাথে ভার্নিয়ার স্কেলকে সমন্বয় করা হয়। ভার্নিয়ার স্কেল মূল স্কেলের পাশে লাগানো থাকে এবং সামনে পেছনে সরানো যায়

পরিমাপের এককের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর। অথবা, ভৌত রাশির মান নির্ণয়ে এককের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর

যেকোনো কিছু পরিমাপের জন্য প্রয়োজন একটি আদর্শ পরিমাণ যার সাথে তুলনা করে অন্য বস্তু পরিমাপ করা যায়। পরিমাণের এই আদর্শ মানকেই বলা হয় পরিমাপের একক। পরিমাপের ক্ষেত্রে এককের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। কোনো বস্তুর পরিমাপের একক উল্লেখ না থাকলে বস্তুটির পরিমাপ সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায় না। যেমন-কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য 5 বললে বস্তুটির দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায় না। যদি একক উল্লেখ থাকে, যেমন 5 মিটার বা 5 সে.মি. তাহলে বস্তুটির দৈর্ঘ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অর্থাৎ কোনো কিছুর পরিমাপ সুনির্দিষ্ট করে বোঝায় জন্য একটি একক ব্যবহার করতে হবে যা সকলের কাছে বোধগম্য হবে

দৈর্ঘ্যের সূক্ষ্ম ও নির্ভুল পরিমাপের জন্য কী ধরনের স্কেল ব্যবহার করা হয়? ব্যাখ্যা কর।

দৈর্ঘ্যের সূক্ষ্ম ও নির্ভুল পরিমাপের জন্য এমন ধরনের স্কেল ব্যবহার করা হয় যাতে দুটি স্কেলের সমন্বয়ে সঠিক দৈর্ঘ্য নির্ণয় করা যায়।

উপর্যুক্ত ধরনের স্কেলের ক্ষেত্রে স্লাইড ক্যালিপার্সে মিটার স্কেল ও ভার্নিয়ার -স্কেল এবং স্ক্রুগজে একটি রৈখিক স্কেল ও একটি বৃত্তাকার স্কেলের সমন্বয় ঘটানো হয়।

সঠিক পরিমাপের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।

কোনো রাশির প্রকৃত মান জানার জন্য সঠিক পরিমাপের প্রয়োজন। তবে একেবারে প্রকৃত মান পাওয়া সম্ভব নয়; কিছুটা ত্রুটি অবশ্যম্ভাবী।

অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে পরিমাপের ফলাফল মোটামুটি হলেই চলে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয় প্রকৃত মানের কাছাকাছি পৌছার। যেমন- স্বর্ণের মতো দামি দ্রব্যের পরিমাণ সঠিকভাবে করতে হয়। আবার, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পরিমাপ সবচেয়ে সঠিক হতে হয়। ত্রুটি অনেক ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ এর উপর আবিষ্কার ও প্রযুক্তির বিকাশ নির্ভর করে। এক্ষেত্রে সামান্য ত্রুটি অনেক ক্ষতিকর হতে পারে।

অভিকর্ষজ ত্বরণ একটি লব্ধ রাশি”- ব্যাখ্যা কর।

যে সকল রাশি মৌলিক রাশির উপর নির্ভর করে বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় তাদেরকে লব্ধ রাশি বলে। আমরা জানি, অভিকর্ষজ ত্বরণ এক প্রকার ত্বরণ যা অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে হয়।

এখন, অভিকর্ষজ ত্বরণ = $ \frac {\text {অভিকর্ষের প্রভাবে বেগের পরিবর্তন }}{\text {সময়}} $ $$\text{অর্থাৎ} \frac {\text{বেগ}}{\text{সময়}} = \frac {\frac {\text{সরণ}}{\text {সময়}}}{সময়} \ [ \text{তরণ} = \frac {\text{বেগ} }{\text{সময়}}] $$ $$ = \frac{\text {সরণ}}{\text{সময়}^2} $$

এখানে, সরণ (দৈর্ঘ) ও সময় উভয়ই মৌলিক রাশি যার উপর অভিকর্ষজ ত্বরণ নির্ভরশীল। তাই অভিকর্ষজ ত্বরণ একটি লব্ধ রাশি।

দেখাও যে, বল একটি লব্ধ রাশি।

যে সকল রাশি মৌলিক রাশির উপর নির্ভর করে বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় তাদেরকে লব্ধ রাশি বলে। নিউটনের গতির দ্বিতীয় সূত্র হতে আমরা জানি,$$ \text{বল} =\text{ ভর} \times {\text{ত্বরণ}} $$ $$ = ভর \times \frac {\text{বেগ}}{\text{সময়}}$$ $$ =ভর\times \frac{\text{সরণ}}{\text{সময়}^2} $$

অর্থাৎ, বল রাশিটি ভর, সরণ ও সময় এই তিনটি মৌলিক রাশির ওপর নির্ভর করে। অতএব, বল একটি লব্ধ রাশি।

কোনো রাশির পরিমাণ প্রকাশ করতে এককের প্রয়োজন হয় কেন?

যেকোনো কিছু পরিমাপের জন্য প্রয়োজন একটি আদর্শ পরিমাণ যার সাথে তুলনা করে অন্য বস্তু পরিমাণ করা যায়। পরিমাণের এই আদর্শ মানকেই বলা হয় পরিমাপের একক। ধরা যাক, কোনো লাঠির দৈর্ঘ্য বলা হলো 4। তাহলে আমাদের পক্ষে শুধু 4 দ্বারা কিছু বুঝা সম্ভব নয়। মিটার, সে.মি., কেজি, সেকেন্ড নাকি অন্য কিছু তা বলা অপরিহার্য। তাই এটি সুনির্দিষ্ট করে বুঝার জন্য একটি একক ব্যবহার করতে হবে যা সকলের কাছেই বোধগম্য হবে।

পরিমাপের ক্ষেত্রে এককের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

পরিমাপের ক্ষেত্রে এককের ভূমিকা অপরিসীম। কোন বস্তুর পরিমাপের একক উল্লেখ না থাকলে বস্তুটির পরিমাপ সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায় না। যেমন, কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য 10 বললে বস্তুটির দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায় নাঃ যদি একক উল্লেখ থাকে, যেমন 10 মিটার। তবে বস্তুটির দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায়।

মাত্রা বলতে কি বুঝ? ব্যাখ্যা কর

কোনো ভৌত রাশি এক বা একাধিক মৌলিক রাশির সমন্বয়ে গঠিত। সুতরাং যেকোনো ভৌত রাশিকে বিভিন্ন সূচকের (Power) এক বা একাধিক মৌলিক রাশির গুণফল হিসেবে প্রকাশ করা যায়। একটি রাশিতে বিভিন্ন মৌলিক রাশি কোন সূচকে বা কোন পাওয়ারে আছে, তাকে তার মাত্রা বলে। যেমন,$$ বল = ভর \times { \text{ত্বরণ}} $$ $$ = ভর \times \frac {\text{বেগ}}{\text{সময়}}$$ $$ =ভর\times \frac{\text{দৈর্ঘ্য}}{\text{সময়}^2} $$ এখানে দৈর্ঘ্যের মাত্রা L, ভরের মাত্রা M, সময়ের মাত্রা T বসালে বলের মাত্রা পাওয়া যাবে $\frac {ML}{T^2}$ বা $ML{T}^-2$ অর্থাৎ, বলের রয়েছে ভরের মাত্রা সূচক 1, দৈর্ঘ্যের মাত্রা-সূচক1 এবং সময়ের মাত্রা-সূচক -2

মৌলিক রাশির এককসমূহের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার?

মৌলিক রাশির এককসমূহ যেহেতু অন্য এককগুলোর উপর নির্ভর করে না, তাই মৌলিক একক ইচ্ছেমতো নির্বাচন করা যায়। কিন্তু সেই নির্বাচনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থাকতে হবে। এর কয়েকটি বৈশিষ্ট্যও থাকতে হবে।

  • এটি হতে হবে অপরিবর্তী- স্থান, কাল, পাত্র কোনো কিছুর উপর নির্ভর করবে না।
  • কালের বিবর্তনে বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ফলে এর কোনো পরিবর্তন হবে না।
  • সহজে এককটি পুনরুৎপাদন করা যাবে।

1960 সালে এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতি চালুর সময় মৌলিক এককগুলোর যে আদর্শ বা স্ট্যান্ডার্ড গ্রহণ করা হয়েছিল, পরবর্তীকালে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো অর্জনের লক্ষ্যে এদের অনেকগুলোর আদর্শ বদল করা হয়েছে, কিন্তু তাতে এককগুলোর মানের কোনো পরিবর্তন হয় নি।

এককের গুণিতক ও উপগুণিতক ব্যবহার হয় কেন?

অনেক সময় মৌলিক এককগুলোর ভগ্নাংশ বা গুণিতক ব্যবহার করা সুবিধাজনক হয়। যখন একটি রাশির মান খুব বড় বা খুব ছোট হয়, তখন এককটির গুণিতক বা উপগুণিতক ব্যবহার খুবই প্রয়োজনীয় হয়। মূল এককের পূর্বে লিখা গুণিতক বা উপগুণিতক নির্দেশক চিহ্নগুলো উপসর্গ। উদাহরণস্বরূপ আমরা যদি বাতাসের দুইটি অণুর মধ্যকার দূরত্ব বিবেচনা করি, তাহলে দেখি যে এই দূরত্ব খুবই ছোট। এটি হচ্ছে 0,000 00001 m। আমরা যদি বার বার এই সংখ্যাটা ব্যবহার করি, তাহলে আমাদের সাবধান থাকতে হবে প্রতি ক্ষেত্রে শূন্যের সংখ্যা ঠিকমতো উল্লেখ করা হয়েছে কিনা কিন্তু এই সংখ্যাটাকেই যদি আমরা একটা উপসর্গ ব্যবহার করে লিখি, তাহলে 0.000 00001 m কে হয়তো লিখব 0.01µm। “µ” (মাইক্রো) উপসর্গটি 10^6 নির্দেশ করে। এক্ষেত্রে, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।