আজকের আধুনিক বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণের রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। একই সাথে বাংলা ভাষার সাহিত্যের পিছনের গল্পটাও নেহায়েত ছোট নয়। আপনারা অনলাইন ঘাটলেই এ সংক্রান্ত বিশাল বিশাল আর্টিকেল পেয়ে যাবেন। এখানে দীর্ঘ আলোচনা আমাদের মূল উদ্দেশ্য নয় বরং তথ্যগুলোকে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে যা শিক্ষার্থীর একটি নোট হিসেবে কাজ করবে। শিক্ষার্থী যেন তথ্যগুলো খুব সহজেই রিভিশন দিতে পারে এবং মনে রাখতে পারে।
বাংলা ভাষার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
- পৃথিবীর ভাষাগুলোকে কয়েকটি ভাষা পরিবারে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন – ইন্দো-ইউরোপিয়, চীনা-তিব্বতীয়, আফ্রিকীয়, সেমীয়-হেমীয়, দ্রাবিড়ীয়, অস্ট্রো-এশীয় প্রভৃতি (বিশ্বে প্রায় ১০০টিরও বেশি ভাষা পরিবার রয়েছে)। বাংলা ভাষা মূলত ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের সদস্য।
- ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ইউরোপ পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে উৎপন্ন সকল ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের সদস্য।
- ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার মূলত ২টি বর্গে বিভক্ত। যথা – (১) কেন্তুম (২) শতম। কেন্তুমের ২টি শাখা “হিত্তিক ও তুখরিক” এশিয়া অঞ্চলে বিকাশ লাভ করে। এছাড়া এশিয়ার সকল ভাষাই “শতম” শাখার অন্তর্গত।
- খিষ্ট্রপূর্ব দেড় হাজার বছর আগে পশ্চিম এশিয়ার আনাতলিতে (বর্তমান তুরস্কে) হিট্টাইট জাতির মধ্যে হিত্তিক ভাষার প্রচলন ছিল। এবং চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের তুখরিক জাতির মধ্যে তুখরিক ভাষার প্রচলন ছিল।
- বাংলা ভাষায় অনেক সংস্কৃত শব্দ ব্যবহৃত হয় তাই অনেকে মনে করেন সংস্কৃত থেকেই বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে কিন্তু এ ধারণা ভুল।
- ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের আদিভাষা বহু বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষায় পরিনত হয়েছে। ইন্দো-ইউরোপীয় > ইন্দো-ইরানীয় > ভারতীয় আর্য > প্রাকৃত > বাংলা।
- ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয় মাগদী প্রাকৃত থেকে।
- ড. শহীদুল্লাহ’র মতে, গৌড়ীয় প্রাকৃত থেকে বঙ্গকামরূপী হয়ে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে।
- বাংলা ভাষার নিকটতম ভাষা হচ্ছে অহমিয়া ও ওড়িয়া। পালি ভাষার সাথেও বাংলা ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
- ড. শহীদুল্লাহ’র মতে, বাংলা ভাষার জন্ম ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে। তবে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সহ অধিকাংশের মতে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে।
- সে হিসেবে আনুমানিক এক হাজার বছর আগে পূর্ব ভারতীয় প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাাষার জন্ম হয়েছে।
- মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পৃথিবীর ৪র্থ বৃহত্তম ভাষা। বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামের কয়েকটি অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষা বাংলা এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলা ভাষী জনগণ রয়েছে।
ভাষা ও ব্যাকরণ
- বাগযন্ত্রের দ্বারা উচ্চারিত অর্থবোধক ধ্বনির সাহায্যে মানুষের মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যমকে ভাষা বলে।
- ভাষার মৌলিক অংশ ৪টি। যথা – (১) ধ্বনি (২) শব্দ (৩) বাক্য (৪) অর্থ
বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ
- বাংলা ভাষার মৌলিক রূপ বা রীতি ২টি। (১) লিখিত রূপ (২) মৌখিক রূপ। লিখিত রূপ ২ প্রকার – সাধু ও চলিত এবং মৌখিক রূপও ২ প্রকার – চলিত ও আঞ্চলিক।