কোষ বিভাজন – (জীববিজ্ঞান, ৯ম-১০ম) | নোট ২

সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোজোমের শ্রেণিবিভাগ কর। এটি কোন পর্যায়ে ঘটে?

উত্তর: ক্রোমোজোমের শ্রেণিবিভাগ: চার প্রকার। যথা-

১. V (মেটাসেন্ট্রিক)

২.J (অ্যাক্রোসেন্ট্রিক) এবং

৩. L. (সাবমেটাসেন্ট্রিক)

৪.I (টেলোসেন্ট্রিক)
এটি মাইটোসিসের অ্যানাফেজ পর্যায়ে ঘটে।

ক্যান্সার সৃষ্টি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি হতে দুটি, দুটি হতে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রিত থাকে। কোনো কারণে এ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেলে অস্বাভাবিক হারে কোষ বিভাজন হতে থাকবে। এভাবে অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস কোষ বিভাজনই টিউমার এমনকি ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।

প্লীহার সঞ্চালনে অংশগ্রহণকারী পেশীর গঠন ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: প্লীহার সঞ্চালনে অংশগ্রহণকারী পেশিটি হল অনৈচ্ছিক পেশি। এই পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। এ পেশি কোষগুলো মাকু অকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এজন্য এ পেশিকে মসৃণ দেশত বলে। মেরুদন্তী প্রাণীদের রক্তনালি, পৌষ্টিকনালি ইত্যাদির প্রাচিনে অনৈচ্ছিক পেশি থাকে।

প্রকৃত কোষ বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: যেসব কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লি (nuclear membrane) দ্বারা নিউক্লয়াবস্তু পরিবেষ্টিত ও সুসংগঠিত তাদের প্রকৃত কোষ বলে। এসব কোষ রাইবোসোয়ম সহ সকল অঙ্গাণু উপস্থিত থাকে। ক্রোমোসমে DNA, প্রোটিন হিস্টোন ও অন্যান্য উপাদান থাকে। অদিকাংশ জীবকোষ এ ধরনের হয়। কাজের ভিত্তিতে প্রকৃত কোষ দুই প্রকার-দেহকোষ ও জননকোষ।

অনৈচ্ছিক পেশি বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: যে পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয় তাদের অনৈচ্ছিক পেশি বা মসৃণ পেশি বলে। রক্তনালি পৌষ্টিক নালি ইত্যাদির প্রাচীরে এই পেশি থাকে।

কোন টিস্যুকে পরিবহণ টিস্যু বলা হয়? কারণসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: বিভিন্ন ধবনের কোষের সমন্বয়ে যে স্থায়ী টিস্যু তৈরি হয়, তাকে জটিল টিস্যু বলে। এরা উদ্ভিদে পরিবহনের কাজ করে, তাই এদের পরিবহন টিস্যুও বলা হয়। এ টিস্যু দুই ধরনের, জাইলেম এবং ফ্লোয়েম।

প্রোটিন তৈরির কারখানা বলা হয় কোন অঙ্গাণুকে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: প্রোটিন তৈরির কারখানা বলা হয় রাইবোজোমকে।
এই ঝিল্লিবিহীন বা পর্দাবিহীন অঙ্গাণুটি প্রধানত প্রোটিন সংশ্লেষণে সাহায্য করে। প্রোটিনের পলিপেপটাইড চেইন সংযোজন এই রাইবোজোমে হয়ে থাকে। এছাড়া রাইবোজোম এ কাজে প্রয়োজনীয় উৎসেচক সরবরাহ করে থাকে।

কোন প্রকার কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলে? ব্যাখ্যা কর।
অথবা, মিয়োসিসকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয় কেন?

উত্তর: মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় একটি প্রকৃত মাতৃকোষ বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে চারটি অপত্য কোষে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়ায় সাধারণত নিউক্লিয়াস দুইবার এবং ক্রোমোজোম একবার বিভক্ত হয়। ফলে অপত্য কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেক হয়ে যায়। এ বিভাজনে ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের তুলনায় অর্ধেক হ্রাস পায় বলে মিয়োসিস কোষ বিভাজনকে হ্রাসমূলক বিভাজন বলা হয়।

মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ার ধাপ কয়টি ও কী কী?

উত্তর: মিয়োসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াটিতে একটি কোষ দুই ধাপে

প্রথম ধাপ: মিয়োসিস-১। এ ধাপে প্রথম বিভাজনের সময় অপত্য কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার অর্ধেকে পরিণত হয়। একে, হ্রাসমূলক বিভাজন বলে।

দ্বিতীয় ধাপ মিয়োসিস-২। এ ধাপটি মাইটোসিসের অনুরূপ।

মাইটোসিসের কয়টি পর্যায় আছে ও কি কি?

উত্তর: মাইটোসিস কোষ বিভাজন একটি অবিচ্ছিন্ন বা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এই বিভাজনে প্রথমে ক্যারিওকাইনেসিস অর্থাৎ নিউক্লিয়াসের বিভাজন ঘটে এবং পরবর্তীতে সাইটোকাইনেসিস অর্থাৎ সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে। বিভাজন শুরুর পূর্বে কোষের নিউক্লিয়াসে কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ হয়। এ অবস্থাকে ইন্টারফেজ পর্যায় বলে। বর্ণনার সুবিধার জন্য মাইটোসিস প্রক্রিয়াকে পাঁচটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়ে থাকে। পর্যায়গুলো নিম্নরূপ-

(ক) প্রোফেজ (Prophase)
(খ) মেটাফেজ (Metaphase)
(গ) টেলোফেজ (Telophase).
(ঘ) প্রো-মেটাফেজ (Pro-metaphase)
(ঙ) অ্যানাফেজ (Anaphase)

প্লাজমালেমা বলতে কী বুঝায়?

উত্তর:প্রোটোপ্লাজমের বাইরে যে দ্বিস্তর বিশিষ্ট পর্দা থাকে তাকে কোষঝিল্লি বা প্লাজমালেমা বলে। উদ্ভিদকোষে কোষপ্রাচীরের সাথে লাগানো কোষের অভ্যন্তরে এর অবস্থান। এটি দুই স্তর বিশিষ্ট একটি স্থিতিস্থাপক পর্দা।

ক্রোমাটিন জালিকা কী? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: কোষের বিশ্রামকালে নিউক্লিয়াসে কুণ্ডলী পাকানে সুক্ষ সুতার মতো অংচই ক্রোমাটিন জালিকা। কোষ বিভাজনের সময় এরা মোটা ও মোটা হয়, তাই তখন তাদের আলাদা আলাদা ক্রোমোসোম হিসেবে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, ক্রোমাটিন জালিকা DNA, RNA, হিস্টোন ও বর্ণহিস্টোন প্রোটিন ইত্যাদি দিয়ে গঠিত।

কোষের শক্তিঘর কাকে বলে?

উত্তর: মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলা হয়। জীবের শ্বসনকার্যের সাহায্য করা মাইটোকন্ড্রিয়ার প্রধান কাজ। তোমরা জেনেছ যে শ্বসন ক্রিয়ায় প্রধান ধাপ দু’টি। এর প্রথম ধাপ গ্লাইকোলাইসিদের বিক্রিয়াগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ায় ঘটে না। তবে দ্বিতীয় ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ক্রেবস চক্রের বিক্রিয়াগুলো এ অঙ্গাণুর মধ্যেই সম্পন্ন হয়। ক্রেবস চক্রেন বিক্রিয়াগুল্যে মাইটোকন্ড্রিয়াতেই সম্পন্ন হয়। ক্রেবস চক্রে সর্বাধিক শক্তি উৎপাদিত হয়। এ জন্য মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র বা পাওয়ার হাউস বলা হয়।

নালীবিহীন গ্রন্থি বলতে কী বোঝায়।

উত্তর: নালীবিহীন গ্রন্থি বলতে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থিকে বোঝানো হয়। নালীবিহীন বা অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস হলো হরমোন, যা রক্তের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।

কার্ডিয়াক পেশি কী ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: হৃৎপিন্ডের প্রাচীর অনৈচ্ছিক পেশি দিয়ে গঠিত। এসব পেশিকে হৃৎপেশি বা কার্ডিয়াক পেশি বলে। পেশিগুলো তিনটি স্তরে বিন্যস্ত থাকে। যেমন-

(1) এপিকার্ডিয়াম (সবচেয়ে বাইরের স্তর),

(ii) মায়োকার্ডিয়াম (হৃৎপ্রাচীরের মধ্যবর্তী স্তর),

(iii) এন্ডোকার্ডিয়াম (হৃৎপ্রাচীরের অন্তগ্রস্থ স্বর)।

সিডকোষ বলতে কী বোঝায়?

সিভকোষ ফ্লোয়েমের বিশেষ ধরনের কোষ যা দীর্ঘ পাতলা কোষপ্রাচীরযুক্ত জীবিত এবং লম্বালম্বিভাবে একটির উপর একটি সজ্জিত হয়ে মিতুল করে। এদের প্রাচীর লিগনিনযুক্ত। পরিণত সিডকোষে কোনো নিউক্লিয়াস থাকে না।

সিউডো-স্ট্রাটিফাইড আবরণী টিস্যু কী? উদাহরণ দাও।

উত্তর: যেসব আবরণী টিস্যুর কোষগুলো ভিত্তি পর্দার উপর একবারে বিনস্ত থাকে কিন্তু কোষগুলো বিভিন্ন উচ্চতার হওয়ায় এই টিস্যুকে দেখতে স্তরীহত মনে হয়, তাদেরকে নিউয়ো-স্ট্রাটিফাইড আবরণী টিস্যু বলে। যেমন -ট্রাকিয়া

অণুবীক্ষণ যন্ত্র কী? কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: যে যন্ত্রের সাহায্যে অতি ক্ষুদ্র কোনো বস্তুকে বহুগুণ বড় করে দেনা বা ভাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র বলে। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দু-ধরনের হতে পারে-

। আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র,

ii. ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র

আলোক অনুবীক্ষণ যন্ত্র আবার দুই ধরণের-

। সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্র,

ii. যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র।

শ্বসনতন্ত্রের গঠন উপাদানগুলো কী কী?

উত্তর: মানুষের নাসারন্ত, গলবিল, ল্যারিংস, ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাস, এস্কিল অ্যালভিওলাই এবং একজোড়া ফুসফুস নিয়ে মানুষের শ্বসনতন্ত্র গঠিত। এই ৫ মানুষের দেহের সঞ্চিত খাদ্যকে পরিবেশ থেকে গৃহীত অক্সিজেনের সহায় জারণ প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করে। এ শক্তি দেহের দৈনন্দিন কাজে সহায় করে।

সরল টিস্যু বলতে কি বুঝ? সরল টিস্যু কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: যে স্থায়ী টিসার প্রতিটি কোষ আকার, আকৃতি ও গনি মে আসন্ন তাকে সরল টিস্যু বলে। কোষের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে টিস্যুকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

ক. প্যারেনকাইমা।

খ. কোলেনকাইমা:

গ. ভেরেনকাইমা।

হৃৎপেশির গঠন ও কাজ উল্লেখ কর।

উত্তর: কার্ডিয়াক পেশি বা হৃৎপেশি মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃৎপিণ্ডের এক বিশে ধরনের অনৈচ্ছিক পেশি। এই টিস্যুর কোষগুলো নলাকৃতির, শাখায়ির। আড়াআড়ি দাগযুক্ত। এ টিস্যুর কোষগুলোর মধ্যে ইন্টারকালাটেড ডিয় থাকে। এদের সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। অর্থাৎ কায়িক পেশির গঠন ঐচ্ছিক পেশির মতো হলেও কাজ অনৈচ্ছিক পেশির মতে কার্ডিয়াক পেশির কোষগুলো শাখার মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে। পিচের সা কার্ডিয়াক পেশি সমন্বিতভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। মানব ভগ সৃষ্টির একটা বিশেষ পর্যায় থেকে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত হৃৎপিণ্ডের কার্ডিয়াক পেশ একটা নির্দিষ্ট গতিতে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে দেহের মধ্যে রক্ত চলাচাগ প্রক্রিয়া সচল রাখে।

জটিল টিস্যু কী? উদাহরণ দাও।

উত্তর: বিভিন্ন প্রকারের কোষ সমন্বয়ে যে স্থায়ী টিস্য গঠত হয় তাকে তটিন টিস্য বলে। এরা উদ্ভিদে পরিবহনের কাজ করে, তাই এদের পরিবহন উসুন বলা হয়। এ টিস্য দুই ধরনের, যথা- জাইলেম ও ফ্লোয়েম জাইলেম একত্রে উদ্ভিদের পরিবহন টিসা গুচ্ছ গঠন করে।

প্রাণিটিস্যু কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: প্রাণিটিস্যু তার গঠনকারী কোষের সংখ্যা বৈশিষ্টা এবং তাদের দিয়ে পদার্থের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে প্রধানত চার ধরনের হয়। যথা

i. আবরণী টিসু্যু।
ii. যোজক টিস্যু:
iii.পেশি টিস্যু
iv. স্নায়ু টিস্যু।

কোষের কোন অঙ্গাণুটি স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টিতে অবদান রাখে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: কোষের সেস্ট্রোজোম অঙ্গাণুটি স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টিতে অবদান রাখে। কোষ বিভাজনের সময় সেন্ট্রিওলের অণু নালিকাগুলোর প্রাপ্ত দুটি একত্রিত হয় এবং মাবখানটা প্রশস্থ থাকে। এ ধরনের গঠনকে তখন মাকুর মতো দেখায় যাকে স্পিচল যন্ত্র বলে। সেন্ট্রোস্ফিয়ার সহ সেন্ট্রিওলকে সেন্ট্রোজোম বলে।

সেন্টোজোমে থাকা সেন্ট্রিওল কোষ বিভাজনের সময় অ্যাস্টার রে তৈরী করে।

প্রোটিন তৈরির কারখানা বলা হয় কোন অঙ্গাণুকে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তৈতর: প্রোটিন তৈরির কারখানা বলা হয় রাইবোজোমকে।

এই ঝিল্লিবিহীন বা পর্দাবিহীন অঙ্গাণুটি প্রধানত প্রোটিন সংশ্লেষণে সাহায্য করে। প্রোটিনের পলিপেপটাইড চেইন সংযোজন এই রাইবোজোমে হয়ে থাকে।এছাড়া রাইবোজোম এ কাজে প্রয়োজনীয় উৎসেচক সরবরাহ করে থাকে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।