১। বহিঃনিষেক থেকে অন্তঃনিষেক পৃথক হয় কেন?
যে নিষেক ক্রিয়া প্রাণিদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তা বহিঃনিষেক নামে পরিচিত। এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন: বিভিন্ন ধরনের মাছ, ব্যাঙ প্রভৃতি।
অন্যদিকে স্ত্রীদেহের জননাঙ্গে সংঘটিত নিষেক অন্তঃনিষেক নামে পরিচিত। অন্তঃনিষেখ ডাঙায় বসবাসকারী অধিকাংশ প্রাণীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
তাই বলা যায়, বহিঃনিষেক থেকে অন্তঃনিষেক ভিন্ন।
২। ধুতুরা ফুলকে কী ধরনের ফুল বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।বা, ধুতুরা ফুলকে সম্পূর্ণ ফুল বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
: যে ফুলের মধ্যে পাঁচটি স্তবকের সবগুলোই উপস্থিত থাকে, তাকে সম্পূর্ণ ফুলে বলে।
একটি আর্দশ ফুলের মধ্যে পাঁচটি স্তবকের মধ্যে দুটি স্তবক (পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক) প্রজননের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এরা সরাসরি প্রজননে অংশ নেয়, অন্য স্তবকগুলো সরাসরি অংশ না নিলেও প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করে। ধুতরা ফুলে এই পাঁচটি স্তবকই উপস্থিত থাকে। তাই ধুতুরাকে সম্পূর্ণ ফুল বলা হয়।
৩। সহবাসী উদ্ভিদ ভিন্নবাসী উদ্ভিদ থেকে আলাদা কেন?
: উচ্চ শ্রেণীর অধিকাংশ উদ্ভিদ দুটি বিপরীতধর্মী জননকোষ পরস্পরের সাথে মিলিত হয়। এদের একটি পুংজনন কোষ অন্যটিকে স্ত্রীজনন কোষ বলে। উদ্ভিদে এই ধরনের জনন কোষ একই দেহে সৃষ্টি হলে এরা সহবাসী (monoecious) উদ্ভিদ। যখন দুধরনের জননকোষ আলাদা দেহে সৃষ্টি হয় তখন সেই উদ্ভিদকে ভিন্নবাসী (dioecious) উদ্ভিদ বলে।
৪। এইডস আক্রান্তে মৃত্যু অনিবার্য -ব্যাখ্যা কর।
বা, এইডসকে ঘাতক ব্যাধি বলা হয় কেন?।
বা, AIDS কে কেন ঘাতক রোগ বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।
বা. এইডসকে একটি মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি বলা হয় কেন?
: HIV ভাইরাসের আক্রমণে এইডস হয়। এই ভাইরাস শ্বেত রক্ত কোষের ক্ষতিসাধন করে এবং এ কোষের এন্টিবডি তৈরিসহ রোগ প্রতিরোধ-সংক্রান্ত কাজে ‘বিঘ্ন ঘটায়। ফলে শ্বেত রক্ত কোষের সংখ্যা ও এন্টিবডির পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে। এই ভাইরাস মানবদেহে সুপ্ত অবস্থায় অনেক দিন থাকতে পারে। এই ভাইরাসের আক্রমণে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায় বলে রোগীর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়ে। তাই AIDS কে ঘাতক ব্যাধি বলা হয়।
৫। HIV কে ঘাতক ভাইরাস বলা হয় কেন?
: HIV ভাইরাসের আক্রমণে এইডস হয়। এই ভাইরাস শ্বেত রক্ত কোষের ক্ষতিসাধন করে এবং এ কোষের এন্টিবডি তৈরিসহ রোগ প্রতিরোধ-সংক্রান্ত কাজে বিঘ্ন ঘটায়। ফলে শ্বেত রক্ত কোষের সংখ্যা ও এন্টিবডির পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে। এই ভাইরাস মানব শরীরের সুপ্ত অবস্থায় অনেকদিন থাকতে পারে।এই ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায় বলে রোগীর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়ে।তাই HIV কে ঘাতক ভাইরাস বলা হয়।
৬। পরপরাগায়নের মাধ্যমে কীভাবে উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়?
বা, পর-পরাগায়নে নতুন ভ্যারাইটি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কেন?
বা, পর-পরাগায়নে নতুন ভ্যারাইটি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? ব্যাখ্যা কর।
বা, পরপরাগায়নে নতুন প্রকরণ সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে কেন?
বা, পরপরাগায়নে নতুন বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয় কেন?
: পরপরাগায়নে নতুন ভ্যারাইটি সৃষ্টি: পরপরাগায়নে একই প্রজাতির দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে পরাগ সংযোগ ঘটে। এক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন গুণ সম্পন্ন গাছের মধ্যে পরাগায়ন ঘটে বলে যে বীজ উৎপন্ন হয় তা নতুন গুণ সম্পন্ন হয়। এ বীজ থেকে যে গাছ জন্মায় তাও নতুন গুণ সম্পন্ন হয়। অতএব পরপরাগায়নের ফলে এসব গাছের নতুন ভ্যারাইটি বা প্রকরণ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৭। হাঙ্গরে কী ধরনের নিষেক হয়? ব্যাখ্যা কর।
: হাঙ্গরে অন্তঃনিষেক হয়। যে নিষেক ক্রিয়া প্রাণীদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তা বহিঃনিষেক নামে পরিচিত। এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন- বিভিন্ন ধরনের মাছ। তবে এর ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন- হাঙ্গর এবং কয়েক প্রজাতির মাছ।
৮। ভ্রূণের কোন অঙ্গাণুটি বৃক্কের মতো কাজ করে? ব্যাখ্যা কর।
মানবদেহের প্রধান রেচন অঙ্গ হলো বৃক্ক। জরায়ুর অমরা অঙ্গটি বৃক্কের মত কাজ করে। বৃক্ক যেমন দেহ থেকে নাইট্রোজেন ঘটিত বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয় তেমনি ভ্রূণের বিপাকের ফলে যে বর্জ্য পদার্থ উৎপন্ন হয় তা অমরার মাধ্যমে ভ্রূণের দেহ থেকে অপসারিত হয়।
৯। প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকে- কোন পরাগায়নে? তার দুটি সুবিধা উল্লেখ কর।
: প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকে স্ব-পরাগায়নে।
পরাগায়নের দুটি সুবিধা:
১। পরাগায়ন অনেকটা নিশ্চিত।
২।প্যরাগরেণু নষ্ট হয় খুব কম।
১০। নিষেক ক্রিয়ার ধাপসমূহ কি কি?
: নিষেক প্রক্রিয়া তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়। যথা।
১) পুংজেনন কোষ সৃষ্টি
২) স্ত্রীজনন কোষ সৃষ্টি
৩) পুং ও স্ত্রী প্রজনন কোষের মিলন।
১১)নিষেকের ফলে ডিম্বাশয়ের কোন অংশ থেকে ফলের কোন অংশ উৎপন্ন হয় তা লেখ
উত্তর:ডিয়াশয় থেকে ফলের উৎপত্তি:
(১) ডিম্বাশয় (গর্ভাশয়) -ফল
(ন) ডিম্বাশয় ত্বক- ফল ত্বক।
১২।যৌন প্রজনন বলতে কি বুঝা।
:যে প্রক্রিয়া দুইটি বিপরীত লিঙ্গের প্রাণী পুং ও স্ত্রী জনন কোষ বা গ্যামেট উৎপন্ন করে এবং তাদের নিষেকের মাধ্যমে প্রজনন ঘটায় ও সন্তান সন্তানি উৎপন্ন করে তাকে যৌন প্রজনন বলা হয়। প্রজনন হচ্ছে জীবের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য । সাধারণত উচ্চশ্রেণীর জীব যৌন প্রজনন করে থাকে।
১৩।প্রজনন বলতে কী বুঝায়?
:প্রক্রিয়ায় কোন জীব তার বংশধর সৃষ্টি করে তাকেই প্রজনন বলে।এটি দুইপ্রকার। যথা-
১। অযৌন প্রজনন এবং ২। যৌন প্রজনন।
১৪। ফুলের অত্যাবশান্তীয় স্তবক বলতে কী বোঝায়া
উদ্ভিদ প্রজনন অঙ্গে ফুলের পাঁচটি অংশ থাকতে পারে। যথা-পুষ্প,বৃত, দলমন্ডল, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক। এর মধ্যে পুাস্তবক ও স্ত্রীস্তবক সরাসরি কাজে অংশগ্রহণ করে। এজন্য এই অত্যাবশান্তীয় স্তবক বলে।
১৫।মেনোপজ বলতে কী বোঝায়া
বয়সন্ধিকাল থেকে মেয়েদের নিদির্ষ্ট সময় (২৮ দিন) পরপর রক্তস্রাব বা মাসিক হয়। সাধারণত ৪০-৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত মহিলাদের রক্তস্রাব চক্র চলতে থাকে। এরপর রক্তস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। একে মেনোপজ বলা হয়। এর মাধ্যমে গর্ভধারণ ক্ষমতা রহিত হয়।
১৬। পতঙ্গ পরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্য লিখ।
: পতঙ্গ পরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্য-
১. ফুল উজ্জ্বল বর্ণের হয়।
২. অধিকাংশ ফুলে সুগন্ধ থাকে।
৩. ফুলের গোড়ায় মধু থাকে।
৪. পরাগরেণু আঠালো হয়।
৫.গর্তমুন্ড আঠালো হয়।
১৭। ভ্রুণ আবরণীর গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
: প্রত্যেক প্রজাতিতে ভ্রূণের জন্য মাতৃদেহের ভিতর সহজ, স্বাভাবিক ও নিরপদ পরিবর্ধনের ব্যবস্থা হিসেবে ভ্রূণের চারদিকে কতকগুলো ঝিল্লি বা আবরণ থাকে। এসব ভ্রূণ আবরণী ভ্রুণের পুষ্টি, গ্যাসীয় আদান-প্রদান, বর্জ্য নিষ্কাশন ইত্যাদি কাজে সহায়তা করে। ভ্রূণ আবরণীগুলো ক্রমবর্ধমান ভ্রূণকে রক্ষা করে এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয়। কাজেই গর্ভাবস্থায় ভ্রুণ আবরণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৮।অসম্পূর্ণ ফুল বলতে কী বুঝায়?
: বিভিন্ন ফুলের সাধারণত পাঁচ ধরনের স্তবক বা অংশ থাকে। যথা-১পুষ্প, বৃতি, দলমন্ডল, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক। তবে সব ধরণের ফুলে এই পাঁচটি অংশ উপস্থিত নাও থাকতে পারে। কোন ফুলে এই পাঁচটি অংশের কমপক্ষে একটি অংশ অনুপস্থিত থাকলেই তাকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে।
১৯। জরায়ুর প্রয়োজনীয়তা কী?
: জরায়ু হচ্ছে স্ত্রী প্রজননতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে ভ্রূণের বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে থাকে। নিম্নে এর প্রয়োজনীয়তা দেওয়া হল।-
(i) জরায়ুর প্রাচীরে ভ্রুণ সংস্তপিত হয়।
(ii) জরায়ুর প্রাচীরে ভ্রুণের বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে।
(iii) জরায়ু নিষেকের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর চলনে সহায়তা করে থাকে।
২০।বয়ঃসন্ধিকাল বলতে কি বুঝ?
মানবশিশু তার বাল্যকাল অতিক্রম করে কৈশোর ও তারুণ্যে উপনীত হয়। কৈশোর ও তারুণ্যের সন্ধিকালই হলো বয়ঃসন্ধিকাল। এসময় ছেলে ও মেয়েদের দৈহিক ও মানসিক গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যগুলোর বিকাশ ঘটে এবং মানসিক পরিবর্তন ঘটে বলে মানবজীবনের এই সময়কালই বিশেষভাবে লক্ষণীয় ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
২১। অমরা একটি ভ্রুণকে বাঁচিয়ে রাখে কিভাবে?
: অমরার মাধ্যমে একটি ভ্রূণ তার মাতৃদেহ থেকে সকল খাদ্য উপাদান। যেমন- শর্করা, আমিষ, স্নেহ, পানি ও খনিজ লবণ ইত্যাদি গ্রহণ করে এবং অমরার মাধ্যমে মায়ের রক্ত থেকে অক্সিজেন গ্রহন করে এবং নিজের কার্বন ডাই-অক্সাইড বিনিময় করে। এভাবে অমরা একটি ভ্রূণকে বাঁচিয়ে এখে।
২২।বৃতির কাজ ব্যাখ্যা কর।
: ফুলের বাহিরের স্তবককে বৃতি বলে। সবুজ বৃতি খাদ্য প্রস্তুত কাজে অংশ নেয়। এদের প্রধান কাজ ফুলের ভিতরের অংশগুলোকে রোদ, বৃষ্টি ও পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা করা। তবে যখন বৃতি রঙ বেরঙের হয় তখন তারা পরাগায়নে সাহায্য করে, অর্থাৎ পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এমন পোকামাকড়, পশুপাখি ইত্যাদিকে আকর্ষণ করে।
২৩।নিষেকের তাৎপর্য লিখ।
:উদ্ভিদের ক্ষেত্রে নিষেকের তাৎপর্য:
(i) নিষেকের ফলে স্ত্রী স্তবকের ডিম্বকসমূহ বীজে রূপান্তরিত হয়।
(ii) নিষিক্ত বীজ উদ্ভিদের বংশ বৃদ্ধি করে
(iii) উদ্ভিদের নিষেক দ্বারা সৃষ্ট ফল ও বীজ খেয়ে প্রাণিকূল ও মানবজাতি বেঁচে আছে।
(iv) নিষেকের ফলে গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয়।
প্রাণিরক্ষেত্রে নিষেকের তাৎপর্য: নিষেক ভ্রূণে ডিপ্লয়েড ক্রোমোজোম সংখ্যাকে পুনঃস্থাপিত করে, ডিম্বাণুকে পরিস্ফুটনের জন্য সক্রিয় করে তোলে, ক্রোমোজোম কর্তৃক বহনকৃত পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্যসমূহকে একত্রিত করে ও ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করে।
২৪।ধানকে বায়ুপরাগী ফুল বলা হয় কেন?
:বায়ুপরাগী ফুল হালকা এবং মধুগ্রন্ত্রিহীন। এসব ফুলে সুগন্ধ নেই। এরা সহজে বাতাসে ভেসে যেতে পারে। এদের গর্ভমুণ্ড আঠালো এবং শাখান্বিত, এখনো পলকের মতো। ফলে বাতাস থেকে পরাগরেণু সহজেই সংগ্রহ করে নিতে পরে। বায়ুপরাগী ফুণের সকল বৈশিষ্ট্য ধানের মধ্যে বিদ্যমান থাকায় এনজে বায়ুপরাগী ফুল বলা হয়।
২৫।অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরী বলতে কী বুঝায়?
:অনেক গাছের ছোট একটি শাখায় ফুলগুলো বিশেষ একটি নিয়মে সাজানো থাকে। ফুলসহ এই শাখাকে পুষ্পমঞ্জরি বলে। যে শাখায় ফুলগুলো সজ্জিত থাকে তাকে মঞ্জরিদন্ড বলে। এ শাখার বৃদ্ধি অসীম হলে অনিয়ত পুষ্পমঞ্জরী বলে। যেমন: কৃষ্ণচূড়া, রজনীগন্ধা ইত্যাদি