মানব শরীরের হরমোনের উৎপত্তি ও কাজ

মানব শরীরের হরমোনের ধারণা

মানুষ এবং বিভিন্ন প্রাণীর দেহে একধরনের বিশেষ নালিবিহীন গ্রন্থি থাকে। এসব গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। নালিবিহীন গ্রন্থি নিঃসৃত এ ধরনের রসকে হরমোন বলে। হরমোন পরিবহনের জন্য পৃথক কোন নালি নেই। হরমোন রক্তস্রোতের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যকোষে পৌছে কোষের প্রান রাসায়নিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে, জৈবিক কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে। সুস্থ দেহে চাহিদা অনুযায়ী গ্রন্থি থেকে অবিরত ধারায় হরমোন নিঃসৃত হয়। তবে প্রয়োজন অপেক্ষা কম অথবা বেশি পরিমান হরমোন নিঃসৃত হলে শরীরে নানরকম অবাঞ্চিত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

হরমোন কি

যে জৈব রাসায়নিক তরল শরীরের কোন কোষ বা গ্রন্থি থেকে শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে নিঃসৃত হয়ে, রক্ত রস বা ব্যাপন প্রক্রিয়ায় উৎপত্তিস্থল থেকে দূরে বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন বিপাকিয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রন করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তাকে হরমোন বলে।

হরমোনের আবিষ্কারক

হরমোন প্রথম আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী বেলিস ও স্টারলিং (১৯০৫) সালে।

হরমোনের কাজ

হরমোন আমাদের দেহে নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে রাসায়নিক সংযোগ স্থাপনের কাজ করে। দেহের বৃদ্ধি সাধন করে। হাসি, কান্না, রাগ, অভিমান, হিংসা, ভয় ইত্যাদি নিয়ন্ত্রন করে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা চালু এবং বন্ধ করে। বিপাকীয় কার্য সম্পাদন, প্রজনন, ক্ষুধা, তৈরী ও খাদ্য হজম ইত্যাদি নানা কাজ করে থাকে।

হরমোনের প্রকারভেদ

TRH – থাইরোট্রপিন রিলিজিং হরমোন

CRH – করটিকোট্রপিন রিলিজিং হরমোন

SRH – সোমাটোট্রপিন রিলিজিং হরমোন

GHRH – গ্রোথ হরমোন রিলিজিং হরমোন

GnRH – গোনাডোট্রপিন রিলিজিং হরমোন

PRH – প্লোলাক্ট্রিন রিলিজিং হরমোন

PIH – প্লোল্যাক্ট্রিন ইনহিবিটিং হরমোন

MSH-RF – মেলানোসাইট স্টিমুলেটিং হরমোন – রিলিজিং ফ্যাক্টর

MSH-RIF – মেলানোসাইট স্টিমুলেটিং হরমোন – রিলিজিং ইনহিবিটিং ফ্যাক্টর

MSH – মেলানোসাইট স্টিমুলেটিং হরমোন

TSH – থাইরোয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন

ACTH – এড্রেনোকরটিকোট্রপিক হরমোন

GH – গ্রোথ হরমোন

STH – সোমাটোট্রপিক হরমোন

GTH – গোনাডোট্রপিক হরমোন

FSH – ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন

LH – লিউটিনিসিং হরমোন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।